প্রকাশিত: ২৪/০৪/২০১৮ ১১:৪৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:৪৪ এএম

ডেস্ক নিউজ : ঢাকার ইয়াবা সম্রাট জহিরুল ইসলাম বাবু (২৮)। জন্ম টেকনাফের টেকপাড়ায়। বাবা সিএন্ডএফের কর্মকর্তা।

২০১২ বাবার অমতে বিয়ে করার পরপরই ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। তারপর থেকেই রাজধানীতে শক্তিশালী ইয়াবার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। রাতারাতি হয়ে যান কোটি টাকার মালিক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।

সোমবার রাতে বাবু ধরা পড়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ফেলা জালে। আর ধরা পড়ার পর তার মুখ থেকে বের হয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য।

ডিএনসি কর্মকতাদের বাবু জানিয়েছে, রাজধানীতে তার ইয়াবার চালান আসত কখনো কাঠ ভর্তি ট্রাকে আবার কখনো আসত একটি শীর্ষ স্থানীয় কুরিয়ার সার্ভিসে। আর এই চালান চলে যেত সরাসরি ডিএনসির কাছে ৭/৮ মাস আগে আটক ডালিয়া ও তার সহযোগীদের কাছে। তারাই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এই ইয়াবার খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করত।

ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা অফিসের সুপার ফজলুল হক খান বলেন, বাবু সম্পর্কে আমাদের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল। তাই দীর্ঘদিন ধরে আমরা তাকে আটকের ফাঁদ তৈরি করছিলাম। অবশেষে সোমবার গভীর রাতে তারই এক সহযোগী দিয়ে ফাঁদ তৈরি করি। তাকে দিয়ে ইয়াবা কেনার কথা বলে বাবুর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়। একপর্যায়ে বাংলাদেশ আই হসপিটালের পেছনে তারা সাক্ষাত করে। এসময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা ডিএনসির গোয়েন্দারা গিয়ে বাবুকে আটক করে। পরে তাকে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানার জাফরাবাদ শংকরের ৩২৮ নম্বর ভবনের দোতলার একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে অভিযান চালাই। সেখানে তল্লাশী করে ১৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

ফজলুল হক আরো বলেন, গোয়েন্দাদের একই টিম আদাবর থানার নবোদয় আবাসিক এলাকায় ইয়াবা সম্রাজ্ঞী ডালিয়া আক্তারের ভাই সৈয়দ মাহবুব আলমের বাসায় অভিযান চালায়। এসময় সৈয়দ মাহবুব আলম ও স্ত্রী নয়ন কে তাদের হাতে রাখা ব্যাগ হতে ১৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর ডিএনসি গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মাহবুব আলমের মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম এবং বোন ডালিয়া আক্তার। তারা ইয়াবা সাম্রাজ্ঞী হিসাবে পরিচিত। ৭/৮ মাস আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের একটি টীম ৫০০০০ পিস ইয়াবাসহ তাদেরকে আটক করে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে আছেন। সৈয়দ মাহবুব আলমের বাবা একসময় পুলিশে চাকরি করতেন। বাবা-মার ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবার পর মা মনোয়ারা বেগম ইয়াবা ব্যবসা শুরু করেন। একসময় তারা ঢাকার অন্যতম শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হয়ে যায় । মা বোনের পথ ধরে মাহবুব আলমও ইয়াবার ব্যবসার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। এমনকি বিয়ে করার পর স্ত্রী নয়নকেও ইয়াবা ব্যবসায় নামায়।

গত সপ্তাহে মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় অভিযান চালালে টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। তখন তাদের ঘর থেকে ইয়াবা বিক্রির সামগ্রীসহ উদ্ধার করা হয় ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা।

ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা সুপার ফজলুল হক খান আরো বলেন, এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট থানায় আগে থেকেই একটি সাধারন ডায়েরী করা ছিল। তবে গত রাতের অভিযানে উদ্ধার ও আটকের বিষয়ে মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে আনার প্রক্রিয়া চলছে।

পাঠকের মতামত