প্রকাশিত: ২৭/১০/২০১৮ ৬:৫৯ পিএম
আলমগীর মাহমুদ

আলমগীর মাহমুদ :

আলমগীর মাহমুদ

” ইসমাইল অরঅ হাড়ভাঙ্গার তৈল বড় উপকারী, বিষ কষ্ট বেদনা পাইলে দিবেন মালিশ করি”–আমাদের ছেলেবেলায় গাঁও,গেরামে সুরে সুরে বিক্রি হইত বেদনা উপশমকারী ইসমাইলের হাঁড় ভাঙ্গার তৈল।এলাকায় ক্যাম্পাছারের পাসারী ঔষধ। লতাপাতা থেকে তৈরি বলে বেশ বিশ্বাস ও কদর ছিল।শরীরের ব্যথা উপশমে সে ছিল মরদ,নির্মূলে নয়।

ইয়াবা নির্মূলে পদক্ষেপ যেন সেই ইসমাইলের হাড়ভাঙার তেল বিক্রেতার বেশেই। কার্যকারিতায়ও আছে বেশ মিল।প্রয়োজন ছিল সামাজিক আন্দোলনের। দায়িত্ব ছিল ‘আপনার ‘আমার’।

টিঁয়া থাইলে মিয়া”–সমাজ বাস্তবতায় এমন ভাবনা ইয়াবাকে আলাউদ্দিনের আশ্চর্য্য প্রদীপ বানিয়েছে।
বনেছে অপ্রতিরোধ্য। টাকায় বাঘের চোখ ও মেলাচ্ছে ভাবনায় চোরকে শুনানো যাচ্ছে না ধর্মের কাহিনী। মানব,মাদক পাঁচারের Air port বনেছে কক্সবাজার।

চাকরীর ভাইভাতে কক্সবাজার বাড়ি বললেই কর্তারা মুচকি হাসে।একজন অন্যজনের দিকে তাঁকায়।শুরু করে বইখাতার প্রশ্ন নয়,১.ইয়াবা ২.মানব পাঁচার ৩.রোয়াইঙ্গার প্রশ্ন।

নিকট অতীতে কক্সবাজার নাম শুনলেই সৈকত রাণীর আমেজের লোভনীয় চেহেরায় ভাবত ভ্রমনে একজন গাইড পাওয়া গেল।মিলত সমীহ,সমাদর।

এখন ভাবনা বিপরীত ইয়াবা কারবারি, মানব পাচারকারী, রোয়াইঙ্গা সেবকের বাসই যেন এই মুল্লুকে।যারা পরীক্ষায় অংশ নেয়া তারা যেন তাদেরই সন্তান।

১৯৫০ এর দশকে বিবাদ বিসম্বাদে সবাই মিলে কইত ‘আস মাস সাহেবের কাছে যাই।’ সেদিন সর্বোচ্চ সন্মানী মানুষটি ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। উনার আপোষ মীমাংসা দেবদূতের কবজের মতো শ্রদ্ধা করতো।

গ্রামীণ সালিশে সর্দার অথবা বড়জনেরা মিমাংসা করত।কেউ মানতে না চাইলে অপরাধীর সাথে সমাজের সভ্যদের আগুন, পানি বর্জনের ঘোষণা দিয়ে একঘরে করে সমাজ বিচ্ছিন্ন করে রাখত।যতক্ষণ অনুতপ্ত না হয় ততক্ষণ।সেদিনের কথা মনে হইলে,সত্য স্বীকারে ইচ্ছে জাগে “আধুনিক হইলাম, সুখী হইলাম না।

বড় বিল্ডিংওয়ালাকে আমরা জীবনে সফল মানুষ ভাবি,ভাল মানুষকে নয়।সফলতা দেখাতে ইয়াবা কারবারিরা রাস্তার ধারে বাড়ি গড়ে জানান দেয় সে সফল,পাত্তির মালিক বনেছে।

বোধে নেই অপরাধের লেশমাত্রা।চিত্তে নেই ভয়।চোখে নেই লজ্জা।আমরাই হাত কচলিয়ে নিয়েছি সুযোগ আর সুবিধা। গড়েছি বেয়াই,বেয়াইনের সম্পর্কে। বানিয়েছি মসজিদ, মন্দিরের সভাপতি। ক্লাবের উপদেষ্টা। ভাল মানুষটার নাম আসলেই বলেছি ” উনি কি দিতে পারবে?

নীতি,নৈতিকতা, শিক্ষা,ধর্ম আসহায়,পরাজিত। জিতেছে কড়ি,পাত্তি,মালপানি।অবৈধ অর্জনে হেঁইয়া দিয়েছি।মার টান” হেঁইয়া’, আরো জোরে “হেঁইয়া”,আরো জোরে ” হেইয়া”,জোরে জোরে ” হেইয়া”।

“হেঁইয়া” র শক্তি সাহস, প্রেরণায় বানিয়েছি ” GODFATHER” কারবারির ভাগে যদি ক্রস বরাদ্দ হয়,সুবিধা ভোগীর ভাগে পড়ল কি!
ওদের ক্রস দেবার আগে ক্রস প্রয়োজন –আপনার, আমার।এইডস আক্রান্ত সমাজের, নইলে আগামীকাল তারাই আবার জন্ম দিবে নুতন “GODFATHER” এর!

লেখক :-
বিভাগীয় প্রধান।সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।
উখিয়া কলেজ কক্সবাজার।
[email protected]

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...