ইয়াবার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ব্যথানাশক ট্যাবলেট ট্যাপেন্টাডল। আগে দেশে পাওয়া গেলেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তদারকির কারণে বর্তমানে এর উৎপাদন বন্ধ। তবে সীমান্ত গলিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আসছে এই ট্যাবলেট। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
দেশজুড়ে যখন ইয়াবার বিরুদ্ধে মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, তখন মাদকসেবীদের কাছে এর বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ব্যথানাশক ট্যাবলেট ট্যাপেন্টাডল।
মাদক হিসেবে নতুন ব্যবহৃত এই ট্যাবলেট সম্পর্কে আগে থেকে তেমন ধারণা ছিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল জানান, ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট দেশে মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে- তা প্রথম জানা যায় গত জানুয়ারিতে। বগুড়া, জয়পুরহাট ও নওগাঁর বেশ কয়েকটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন মাদকাসক্তদের সঙ্গে কথা বলে এই ধারণা পায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এরপর তিনি বিষয়টি জানিয়ে মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে ট্যাপেন্টাডল গ্রুপের ট্যাবলেটকে ‘খ’ তফসিলভুক্ত করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
ভারত থেকে অবাধে এই ট্যাবলেট পাচার হয়ে আসছে দেশে।
সম্প্রতি রাজশাহী মহানগর পুলিশ এই ট্যাবলেটের বড় একটি চালান উদ্ধার করেছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, ট্যাপেন্টাডলের একটি বড় চালান পুলিশ উদ্ধার করেছে। তারা মাদকসেবীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছেন এই ট্যাবলেট এখন ইয়াবার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেবন কৌশলও ইয়াবার মতো।
আরএমপি কমিশনার আরও জানান, নতুন মাদক ট্যাপেন্টাডল দেখতে ইয়াবার মতো। কিন্তু ইয়াবা নয়। এটি মূলত ব্যথানাশক ওষুধ। ইয়াবা আর হেরোইনের বিকল্প হিসেবে এ ট্যাবলেটই বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে। ট্যাবলেট গুঁড়ো করে ইয়াবা আর হেরোইনের মতো করেই সেবন করছেন মাদকসেবীরা। রাজশাহীতে এ ধরনের মাদক উদ্ধারের ঘটনা এটিই প্রথম।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহিন আরা জানান, তীব্র ব্যথায় মরফিনের বিকল্প হিসেবে ট্যাপেন্টাডল রোগীদের দেওয়া হতো। তবে মাদক হিসেবে এটি ব্যবহার করায় এখন আর রোগীদের এ ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে না। ট্যাপেন্টাডলের অতিরিক্ত ব্যবহার মাদকসাক্তদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে।বিডি প্রতিদিন
পাঠকের মতামত