প্রকাশিত: ১২/০৭/২০১৮ ৭:২৭ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:৫২ এএম

রাশিয়ার মস্কো থেকে বিশেষ প্রতিনিধি এস. এম সুমন: ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করলো ক্রোয়েশিয়া। রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে ২-১ গোলে ইংলিশদের স্বপ্নভঙ্গ করেন পেরিসিচ-মান্দজুচিকরা। আর এ ম্যাচ জয়ের ফলে আগামী ১৫ জুলাই লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ফাইনালে ফ্রান্সের মোকাবেলা করবে ১৯৯৮ সালে সেমিফাইনাল খেলা ক্রোয়েশিয়া।

২০ বছর আগে ফ্রান্স বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে স্বাগতিকদের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ক্রোয়েশিয়ার। তবে ২০১৮ সালে রাশিয়াতে নতুন ইতিহাস লিখলো রাকিটিচ, মডরিচদের নিয়ে সোনালী প্রজন্মের ক্রোয়েটরা। ইংল্যান্ডের ৫২ বছর পর ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ধুলিসাৎ করে নিজেদের ফুটবলের নতুন সুর্যোদয় ঘটালো ক্রোয়েশিয়া।

৫২ বছর পর বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিতের হাতছানি নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড। থ্রি লায়ন্সদের সেমিফাইনাল নিশ্চিতের পর থেকে বিশ্বকাপ ফিরছে ঘরে, ইটস কামিং হোম সমর্থকদের এমন প্রত্যাশার অনুপ্রেরণা নিয়ে শুরু থেকে গতিময় ফুটবল খেলতে থাকে থ্রি লায়ন্সরা।

এর ফল পেতে খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি ইংলিশদের। ম্যাচের পাঁচ মিনিটে ডেলে আলীকে ডি বক্সের বাইরে ফাউল করে বসেন ক্রোয়েট অধিনায়ক মডরিচ। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে সেট পিস থেকেই গোল বের করে এনেছে  কোচ সাউথগেইটের শিষ্যরা। এবারও ফ্রি কিক থেকে দুর্দান্ত এক গোলে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলের লিড এনে দেন ট্রিপার। আর তাতেই লুঝনিকি স্টেডিয়ামে গর্জন উঠে ইংলিশ সমর্থকদের।

তবে গোল হজমের পর অ্যাটাকিং ফুটবল খেলার চেষ্টা করে ক্রোয়েটরা। তবে  ইংল্যান্ডের অ্যাটাকিং থার্ডে বার বার ব্যর্থ হয়েছেন মডরিচ, রাকিটিচ ও মানজুকিচরা। উল্টো লিড ধরে রাখতে কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর কৌশলে খেলতে থাকে ইংলিশরা। এর মধ্যে অধিনায়ক হ্যারি কেইন ও রাহিম স্টার্লিং গোল মিসের মহড়া দেয়াই ব্যবধান বাড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড। ১-০ গোলের এগিয়ে থাকার স্বস্তি নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে সাউথগেইটের শিষ্যরা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই চেনা ছন্দে ক্রোয়েশিয়া। সমতায় ফিরতে মরীয়া ক্রোয়েটদের প্রেসিং ফুটবলে দিশেহারা ইংলিশ ডিফেন্স। রাকিটিচ, পেরিসিচ, মডরিচদের সৃষ্টিশীল ফুটবলে প্রাণ ফিরে আসে ম্যাচে। ৬৯ মিনিটে পেরিসিচের গোলে প্রাণ ফিরে পায় ক্রোয়েশিয়ার ফাইনাল স্বপ্ন। এরপরই খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসে ইংলিশরা। কিন্তু  ইংলিশ ফরোয়ার্ডরা ক্রোয়েট ডিফেন্স ভাঙ্গতে ব্যর্থ হলে ১-১ গোলে শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও ছিল ক্রোয়েশিয়ার দাপট। ১০৪ মিনিটে মানজুকিচের শট ঠেকিয়ে দলকে বাঁচান ইংলিশ গোলরক্ষক  পিকফোর্ড।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের সাফল্য পায় ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের ১০৯ মিনিটে পেরিসিচের অ্যাসিস্টের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করে দলকে কাঙ্খিত লিড এনে দেন মানজুকিচ। সেই ২-১ গোলের লিড ধরে রেখে প্রথমবারের মতো স্বপ্নের বিশ্বকাপ ফাইনাল নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া।

 

পাঠকের মতামত