প্রকাশিত: ১১/১১/২০১৮ ১:৫৯ পিএম
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা

এইচএম এরশাদ ::

সংশয় কাটছে, সঙ্কট দূর হচ্ছে বলে প্রতীয়মান। আগামী ১৫ নবেম্বর অর্থাৎ আজ থেকে আর মাত্র ৪ দিন পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু করতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট মহলগুলো জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনী ডামাডোলে রোহিঙ্গা ইস্যুটি ছাইচাপা আগুনের মতো রূপ নিয়ে আছে। এই অবস্থায় মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনার শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আশ্রিত কিছু রোহিঙ্গা, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে পরিবেশের যেমন কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৫ নবেম্বর থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। সে অনুযায়ী শুরুতে টেকনাফের কেরুনতলিঘাটের ট্রানজিট পয়েন্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি এখন প্রত্যাবাসন শুরুর অনুকূলে। উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয়রাও রোহিঙ্গা ভারমুক্ত হওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। তবে ৩০ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে প্রত্যাবাসনবিরোধী সন্ত্রাসীদের তৎপরতার অবসান এখনও ঘটেনি। এখানেই বড় একটি সংশয় দানা বেঁধে আছে। এছাড়া উভয় দেশের সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত। রোহিঙ্গারা এদেশ থেকে যাবে, আর মিয়ানমার তাদের গ্রহণ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেÑএটাই মোদ্দা কথা।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালামের সঙ্গে শুক্রবার রাতেই বৈঠক করেন বার্গনার। জাতিসংঘের বিশেষ এই দূত জানিয়েছেন, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেটি শুরু করা যাবে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম জানিয়েছেন, জাতিসংঘের এই দূতের তথ্য মতে, রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিবেশ প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত। বাংলাদেশও সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শনিবার সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভযোগে বার্গনার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানিয়েছেন, মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্বস্ত করেছেন নিজ দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুকদেরই পাঠানো হবে। জোর করে কাউকে না পাঠানোর আশ্বাস দেন। বার্গনার নয়াপাড়া শালবাগান ক্যাম্পও পরিদর্শন করেন।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে জেনে স্থানীয়রা খুশি ॥ আগামী ১৫ নবেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে জেনে স্থানীয়রা উল্লসিত। ১২ লাখ রোহিঙ্গাভারে উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চল বিপর্যস্ত হয়ে আছে। পাশাপাশি স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপকভাবে। দিন যতই যাচ্ছে স্থানীয়রা ততই অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গারা ধাপে ধাপে যাবে এমন তথ্য প্রচার হওয়ায় তারা দীর্ঘ সময়ের কষ্ট ভুলে নতুন দিনের আশায় আশান্বিত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত