প্রকাশিত: ২৭/১০/২০১৮ ৫:৩৯ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা / ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট:
আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় আবারও ভোট দিয়ে জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৭ অক্টোবর) বরগুনার তালতলী মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এ বাবা-মাকে হারিয়েছি। ছোট ভাইকে হারিয়েছি। ঘাতকরা আমার পরিবারের সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। শুধু দুই বোন বিদেশে থাকায় আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। আমি পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ আপনাদের কাছে চাই।’

জনসভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘আপনাদের মাঝে আমি আমার হারানো বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ খুঁজে পাই।’

তালতলীর উন্নয়ন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তার ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৪ সালে আমি তালতলীতে এসেছিলাম। তখন এই স্কুল সরকারি ছিল না। আওয়ামী লীগ আসার পর স্কুলটি সরকারি হয়েছে। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই, বিগত নির্বাচনে আমরা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই দক্ষিণাঞ্চল অনেক সুন্দর জনপদ। কিন্তু সবসময়ই এই দক্ষিণাঞ্চল অবহেলিত ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আমি আজকে বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি। এগুলো আপনাদের জন্য। আমার পক্ষ থেকে এটি আপনাদের উপহার।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষার্থী বিনা টাকায় বই পাচ্ছে, উপবৃত্তি পাচ্ছে, শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে। মোবাইলে টাকা চলে যাচ্ছে সহজে। দেশের মানুষ এখন ২০০ প্রকার সুবিধা পাচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। এর ফলে কোনো দুর্যোগ এলে খুব দ্রুত খবর পাওয়া যাবে। আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি। বিএনপি ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ তো বন্ধ করে দিয়েছিল।’

‘আমরা পটুয়াখালীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করেছি। এই বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে আপনাদের ঘরবাড়ি আলোকিত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকরা এখন ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এর মাধ্যমে সরাসরি তারা ভর্তুকির টাকা পাচ্ছেন। আমরা একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প করেছি। যার মাধ্যমে প্রত্যেকটা পরিবার যেন স্বাবলম্বী হতে পারে। আমরা চাই দেশের মানুষ ভালো থাকুক, তাদের জীবনযাত্রা মানের উন্নয়ন হোক।’

তিনি বলেন, ‘শুধু শহরের মানুষ সুখে থাকবে না। প্রতিটি গ্রামকে আমরা শহর হিসেবে উন্নীত করে দেব। নিজের ঘরে বসে আমাদের ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে। অনলাইনে বসে যাতে দেশে-বিদেশে চাকরি করতে পারে। পয়সা কামাই করতে পারে তার জন্য লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ট্রেনিং দিচ্ছি। এর ফলে ঘরে বসে পয়সা উপার্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হয়। কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের কোনো স্বীকৃতি ছিল না। আমরা কওমি মাদ্রাসার সনদের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে চাকরি পাবে সেই ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি। এই সনদের মাধ্যমে আমরা তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তারাও আমাদের সন্তান। তারা লেখাপড়া শিখে জীবনমান উন্নয়ন করুক এটা আমরা চাই।’

তালতলীতে জাহাজ নির্মাণ শিল্প গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শিপ রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা করব। এর মাধ্যমে আপনাদের অঞ্চলের মানুষ লাভবান হবেন। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ চিরদিন অন্ধকারে ছিল। আমরা এসেই উন্নয়ন করেছি। আর ভবিষ্যতে কাউকে কষ্ট করতে হবে না। সকলেই সুন্দরভাবে যাতে বাঁচতে পারে আমরা সেই ব্যবস্থা করে দেব।’

বিএনপির রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একবার না বারবার আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। ওরা কী করেছে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদের দেশে রূপান্তর করেছিল। দেশকে তারা ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। দুর্নীতিতে তারা পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কারণ তারা তো দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, দেশের উন্নয়ন করবে কীভাবে?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। বিনা পয়সায় আপনারা ৩০ প্রকারের ওষুধ পান। স্বাস্থ্যসেবা আপনাদের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়েছি। যারা গৃহহীন, যাদের ঘর নেই আমরা বিনা পয়সায় তাদের ঘর করে দেব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

জনসভায় আগতদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকবার নৌকায় ভোট দিন। আপনাদের সেবা করার সুযোগ চাই।’

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...