প্রকাশিত: ১৯/০৮/২০১৮ ৭:৩৬ এএম

ঢাকা: আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোনো ধরনের আন্দোলন দাঁড় করাতে দেবে না সরকার। এ ব্যাপারে সরকার কঠোর এবং সতর্কাবস্থানে রয়েছে।

যে কোনো ধরনের আন্দোলন ঠেকাতে প্রয়োজনে গ্রেফতার অভিযান আরও জোরদার হবে। রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক সব আন্দোলনের ক্ষেত্রেই এ নীতি অনুসরণ করা হবে।

সরকার এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিকরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানামুখী তৎপরতা চালাতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারের কাছে তথ্যও রয়েছে।

আগামী সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত এ সময়টায় তারা মাঠে নামার চেষ্টা করবে। নিজেরা মাঠে নামার পাশাপাশি অরাজনৈতিক আন্দোলনকেও উস্কে দেওয়ার চেষ্টাও করবে। এ সময়কে টার্গেট করে বিএনপি ইতোমধ্যেই তৎপর হয়ে উঠেছে। এ ধরনের তৎপরতা সম্পর্কে ও এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত সে ব্যাপারেও সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে।

সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতি নির্ধারকরা আরও জানান, যে কোনো তৎপরতা মোকাবিলায় সরকার সতর্ক ও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ সরকার নেবে। তারা যাতে কোনোভাবেই মাঠে নামতে না পারে সে জন্য এ ধরনের তৎপরতার সঙ্গে জড়িতদের প্রয়োজনে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যেও এ ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, কোথায় কোথায় বৈঠক হয়েছে, কারা কোথায় আসা যাওয়া করছে সব খোঁজখবর আমরা রাখছি। অফিসে বসে প্রধানমন্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিচ্ছেন। গালিগালাজ করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গ্রেফতার হচ্ছে না, জেলে যাচ্ছেন না বলে এতো বড় বড় কথা বলতে পারছেন।

এর আগে গত ১১ আগস্ট আরেক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা জানি কোথায় কারা কারা গোপন বৈঠক করছেন। টেমস নদীর তীরে, ব্যাংকক, দুবাইতে বসে কারা কোন গডফাদারের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ধৈর্য ধরে আছি, সময়মতো ব্যবস্থা নিবো।

সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন বা এ ধরনের আর কোনো অরাজনৈতিক আন্দোলনও যাতে গড়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে সরকার সতর্ক রয়েছে। এ ধরনের আন্দোলন গড়ে উঠলে বিএনপি-জামায়াত বা তাদের সহযোগী বিভিন্ন গোষ্ঠী তার উপর ভর করতে পারে। কোটা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের উপরও ভর করে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিলো। তবে কোটা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দেলনে যারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিছে তাদের কাউকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ আন্দোলনে যারা উস্কানি দিয়েছে এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলার আন্দোলনে রূপ দিতে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের ইতোমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের আগে কাউকে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির করতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে প্রশাসন সতর্ক আছে। গত ৯ বছরে বিএনপি কোনো আন্দোলন করতে পরেনি, এখনও তারা পারবে না। তবে আন্দোলনের নামে গত নির্বাচনের আগে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিলো সে ধরনের চেষ্টা হলে বিএনপির অস্থিত্ব বিলিন হয়ে যাবে। বিএনপির যাও কিছু নেতাকর্মী মাঠে রয়েছে, কিছুটা রাজনৈতিক তৎপরতা আছে সেটাও আর থাকবে না।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, অক্টোবরের শেষের দিকে নির্বাচনের তফসিল হতে পারে। বিএনপি সরকারের কাছ থেকে কোনো দাবি আদায় করতে হলে এর আগেই করতে হবে বলে মনে করছে। দাবি দাওয়ার জন্য স্বাভাবিক কোনো আন্দোলন সেটা আমরা হুমকি মনে করি না। কিন্তু অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে সেটা সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী রয়েছে, তারা দেখবে।

পাঠকের মতামত

আশ্রয় নেওয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সদস্যদের ফেরানোর বদলে দেশটির জান্তা সরকারের কারাগারে থাকা ...