প্রকাশিত: ১৫/০৯/২০২০ ৭:৩৯ এএম

মাহাবুবুর রহমান

দেশের প্রথম আধুনিক পানি পরীক্ষাগার তৈরি হচ্ছে কক্সবাজারে। যদিও দুই বছর আগে থেকে একটি পানি পরীক্ষাগার থাকলেও সেখানে আরো আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করে সেটাকে দেশসেরা করার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। কর্তৃপক্ষের দাবী এই আধুনিক পানি পরীক্ষাগার চালু হলে কক্সবাজার সহ আশপাশের জেলার মানুষ নিজেরে খাবার পানি পরীক্ষা করে বিশুদ্ধ খাবার পানি খাওয়ার নিশ্চয়তা পাবে।
কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী ঋত্বিক চৌধুরী জানান, কয়েক বছর আগেও কক্সবাজারের মানুষের বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করা খুবই দূরহ ছিল তবে বর্তমানে সরকারের নানান পরিকল্পনায় কক্সবাজার শহর এলাকা ছাড়াও গ্রামাঞ্চলে এখন অনেক মাধ্যম থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে সেটা মানসম্মত কিনা খাবারের উপযুক্ত কিনা সেখানে কি পরিমান আয়রন বা ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ আছে সেটা পরীক্ষার ব্যবস্থা আগে এখানে ছিলনা। তবে ২০১৭ সালের শেষের দিকে সরকারের ব্যবস্থাপনায় কক্সবাজার সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের পাশে পানি পরীক্ষাগার নির্মাণ করা হয়। এতে কক্সবাজার চট্টগ্রাম, বান্দরবান সহ বিভিন্ন জেলা থেকে পানি পরীক্ষা করার জন্য নমুনা আসছে। এতে সাধারণ মানুষ এবং সরকারি বেসরকারি দপ্তর পানি পরীক্ষা করতে আসছে এবং সহজেই পরীক্ষা করতে পারছে যা আগে ঢাকা থেকে আনতে হতো। এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী আল আমিন বলেন, পানি পরীক্ষাগারটি গত ২ বছর ধরে চালু আছে তবে নতুন করে সেখানে আরো প্যারামিটার সহ যন্ত্রপাতি সংযোজন হচ্ছে যা দেশের কোন জেলা পর্যায়ে নেই। এই পানি পরীক্ষাগার চালু করার জন্য ইতোমধ্যে ৯৬ লাখ টাকা ব্যায়ে ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। এই পানি পরীক্ষাগার চালু হলে এখানে পানিতে কত আর্সেনিক আছে, মানববর্জ্য সহ কি পরিমাণ ক্ষতিকারক জিনিস আছে সেটা সহজেই নির্ণয় করা যাবে। এতে মানুষ অনেক উপকৃত হবে। তিনি জানান গত ১ বছর পানি পরীক্ষাগার থেকে সরকারি রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৯ লাখ টাকা আর পরীক্ষা হয়েছে অন্তত ১৬ হাজার। এ ব্যাপারে পানি পরীক্ষাগারের জুনিয়র ক্যামিস্ট কর্মকর্তা মোঃ শামীম আকতার বলেন, পানি পরীক্ষাগার জেলা পর্যায়ে আছে কিনা আমার জানা নেই তবে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছে এর মধ্যে কক্সবাজারে এরকম একটি প্রতিষ্টান হয়েছে এবং নতুন করে আরো সংযোজন হচ্ছে সেটা খুবই ভাল উদ্যোগ। তিনি বলেন, নিরাপদ পানি পান করা প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকার, স্কুল কলেজ, কল কারখানা থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি বেসরকারী প্রতিষ্টানে পানি সরবরাহ করা হয় কিন্তু সেটা কতটুকু নিরাপদ সেটা পরীক্ষা করা দরকার। আগে সেটা পরীক্ষা করতে অনেক কষ্ট হলেও এখন সহজেই এই পরীক্ষা করা যাচ্ছে। তবে জনবল সংকটের কারণে কাজ করতে বেশ সমস্যা হচ্ছে পানি পরীক্ষাগারে। ৯ জনের বিপরীতে আমরা কাজ করছি মাত্র ২ জন। আর ২ জন দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করছে। নির্বাহী প্রকৌশলী ঋত্বিক চৌধুরী বলেন, পানি হচ্ছে মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ যদি সেটা খারাপ হয় তা পানির চেয়ে ভয়ংকর কিছুই হতে পারেনা। তাই নিরাপদ পানি পান করার জন্য সরকারের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজার নয় সারা দেশের মানুষের উপকার হবে।

পাঠকের মতামত