প্রকাশিত: ২৭/০৯/২০১৭ ৯:৩৬ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:৫৯ পিএম

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে আধুনিক উন্নত বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তুলতে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে গুণগত শিক্ষকের বিকল্প নেই।’

শিক্ষার মানের অবনমন রোধে কোচিং বাণিজ্য এবং গাইড বইও বন্ধ করা হবে বলে তিনি জানান।

বেসরকারি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির (ইইউ) উদ্যোগে ‘উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে কলেজ অধ্যক্ষের ভূমিকা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বুধবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে ইইউ ক্যাম্পাসে এ বৈঠক হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সারাদেশের ৮০০ কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

গোলটেবিল বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের কেউ কেউ প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি ১৩ জন অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু দুষ্কৃতিকারীর জন্য সমস্ত শিক্ষকদের দুর্নাম হচ্ছে। এরা শিক্ষাকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করছেন। বেশি টাকা আয়ের জন্য তারা স্থানীয় এমপিকে দিয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি নেন। এতে শিক্ষার মানে ব্যাঘাত ঘটছে।’

অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসেন না—অধ্যক্ষদের এমন অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ক্লাসে না আসার দায়ভার শিক্ষকদের। ক্লাস আকর্ষণীয় না হলে শিক্ষার্থীরা আসবে কেন? কিছু শিক্ষক ইচ্ছে করেই ক্লাসে ঠিকভাবে পড়ান না। শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা কোচিং বাণিজ্যে মেতে উঠেন। তাই আইন করে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা হবে। নোট এবং গাইড বইও বন্ধ হবে।’

শিক্ষকদের শিক্ষার প্রাণ হিসেবে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষকতা পেশার চাইতে বেশি কিছু। তারাই হলেন মূলশক্তি। তবে কিছু লোক শুধু টাকা কামাইয়ের জন্য মহৎ এ পেশায় ঢুকে পড়েছে। এরাই শিক্ষাকে কলুষিত করছে।’ এদের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার জন্য মন্ত্রী অধ্যক্ষদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে—জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত কলেজে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু করা, উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজির ওপর আরও গুরুত্বারোপ করা, দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে মূল্যায়ন সভার আয়োজন, প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষা বাতিল, শিক্ষকদের শুধু লেকচারমুখী না হয়ে পাঠদানকে অংশগ্রহণমূলক করা প্রভৃতি।

এ ছাড়া আইসিটি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, গণিত, ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচিতি এসব বিষয়ে পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক সংকট দূর করতে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অধ্যক্ষরা।

ইইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুর রবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান, ইইউ’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য আবুল কাসেম হায়দার, আজিজুল ইসলাম, আবুল খায়ের চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এবিএম শহীদুল ইসলাম, শেখ সাইদুর রহমান, আনোয়ার হোসাইন চৌধুরী এবং আলী আজম প্রমুখ।

কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা

গোলটেবিল বৈঠকের পর ইইউ ক্যাম্পাসে ২০১৭ সালে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মুহাম্মদ ইমতিয়াজ ও জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, সাংবাদিক, কৃতী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক, ইইউ’র শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবুল বাশার খান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ট্রেজারার মোহাম্মদ সিদ্দিক হোসাইন।

এ অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, আলিফ গ্রুপ, আল-আমিল প্রো. লি., আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন, আইএফআইএল এবং ন্যাশনাল ব্যাংক। মিডিয়া পার্টনার ছিল দৈনিক সমকাল, অবজারভার, একাত্তর টিভি, রেডিও ক্যাপিটাল, এডুকেশন২৪ ডটনেট এবং এডুআইকন ডটকম।

পাঠকের মতামত

নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, এখন বিসিএস ক্যাডার

গল্প-আড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়জীবনটা উপভোগের সুযোগ আবদুল মোত্তালিবের হয়নি। দুপুর গড়ালেই তাঁকে ছুটতে হতো কাজে। অসচ্ছলতার কারণে ...