প্রকাশিত: ১২/১০/২০১৮ ৮:৫৯ এএম

নিউজ ডেস্ক::

অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগ বিষয়ে এবি ব্যাংক নিয়ে দুদকের তদন্ত চলাকালে এবার পদত্যাগ করলেন ব্যাংকটির এমডি মশিউর রহমান চৌধুরী। গতকাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ ও পরিচালক ব্যারিস্টার ফাহিমুল হক পদত্যাগ করেন। ওই সময় এমএ আউয়ালকে চেয়ারম্যান করা হলেও তিনি এখন আর পর্ষদে নেই। নানা অনিয়মের কারণে ব্যাংকটির বিভিন্ন আর্থিক সূচক এখন নিম্নমুখী। বেশ কিছুদিন ধরে তারল্য সংকটে রয়েছে ব্যাংকটি।

মশিউর রহমান চৌধুরীর পদত্যাগের বিষয়টি ব্যাংকের একজন পরিচালক সমকালকে নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাওয়ায় পদত্যাগের জন্য তার ওপর বিভিন্ন পক্ষের চাপ ছিল। এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিলে তা গৃহীত হয়। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মশিউর রহমান ও ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মহাদেব সরকার সুমনের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

মশিউর রহমান গত বছরের ৯ মে থেকে তিন বছর মেয়াদে এবি ব্যাংকের এমডি পদে নিয়োগ পান। এর আগে ব্যাংকটির ডিএমডি ছিলেন তিনি। ১৯৮৪ সালে সোনালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরুর পর ২০০৩ সালে যোগদান করেন এবি ব্যাংকে।

২০১৬ সালে এবি ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বিদেশে নিবন্ধিত চার কোম্পানির নামে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার (প্রায় চারশ’ কোটি টাকা) ঋণের নামে পাচারের অনুসন্ধান করছে দুদক। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে এসব অর্থ পাচার হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক পরিদর্শনে উঠে আসে। অর্থ পাচারের সঙ্গে সরাসরি সংশ্নিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে পদত্যাগী চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক এমডি এম ফজলুর রহমান ও শামীম আহমেদ চৌধুরী এবং ব্যাংকের হেড অব ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে। গত বছরের ৬ মে থেকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষক দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাপক তারল্য সংকটে ভুগছে বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের এবি ব্যাংক। একটি ব্যাংক বর্তমানে একশ’ টাকা আমানতের বিপরীতে ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা ঋণ দিতে পারে। সেখানে গত জুনে এবি ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত ঠেকেছে ৯২ দশমিক ৯৩ শতাংশে। ওই সময় পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট ২২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ ছিল ২২ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। আর বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ধার ছিল এক হাজার ১০৪ কোটি টাকা। খেলাপি দেখানো হয় এক হাজার ৫২৫ কোটি টাকা, যা প্রায় ৭ শতাংশ।

বিভিন্ন ব্যাংকের এমডিদের পদত্যাগের বিষয়টি এখন বেশ আলোচিত। পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়াসহ নানা কারণে অনেক এমডি পদত্যাগ করছেন। গত ২৯ আগস্ট ইউসিবির এমডি এই আব্দুল মুহাইমেন এবং ১৪ আগস্ট বেসিক ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ আউয়াল খান পদত্যাগ করেন। এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বর নতুন প্রজন্মের মেঘনা ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ নূরুল আমিন, ৩০ অক্টোবর এসআইবিএলের এমডি সহিদ হোসেন এবং ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান পদত্যাগ করেন।

পাঠকের মতামত

আশ্রয় নেওয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সদস্যদের ফেরানোর বদলে দেশটির জান্তা সরকারের কারাগারে থাকা ...