প্রকাশিত: ১৫/০৭/২০১৭ ৭:১৯ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:৪৪ পিএম

এডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান::

এক-মাননীয়ঃ

এক মন্ত্রী মশায়ের শুভাগমন ঘটেছে এলাকায়। ত্রাণ বিতরণ করবেন। তো, সচরাচর যা হয়, ত্রাণের পরিমাণ যা-ই হোক, গদীনসীন সরকারের পঞ্চমুখে প্রশংসা আর বিরোধী দলের পিন্ডি তো চটকাতেই হবে খামোখা।সাথে সেলফিবাজি আর দাঁত কেলানো ফটোসেশন তো আছেই। আর এর জন্যে আয়োজন করা হলো জমকালো এক অনুষ্ঠানের। সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পেলেন আমার এক সুহৃদ।অধমের পারঙ্গম বন্ধুর পারফর্মেন্সে মুগ্ধই হলেন মন্ত্রী মশায় ।কিন্তু একটা বিষয়ে বেশ নারাজ হলেন মন্ত্রীবর। সফরসঙ্গী পুলিশের কর্মকর্তাকে ‘মাননীয়’ বলে সম্বোধণ করেননি সঞ্চালক। মন্ত্রী মশায় অনুষ্ঠানস্থলেই রাগ ঝাড়লেন বেশ। তাঁর একটাই কথা, পুলিশ কর্মকর্তাকেও তাঁর মতো ‘মাননীয়’ সম্বোধন করতে হবে। অগত্যা কী আর করা, মন্ত্রীর ধমকে চমকে গিয়ে তা-ই করে রক্ষে পেলেন সঞ্চালক।

 

দুই-স্যারঃ

দেড় দশকের মতো আগের এক সময়কার ঘটনা। জেলা শহরের এক বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে বেনিয়ার জবান শেখানোর দায়িত্ব পেলুম অধম। কাজে যোগ দিয়ে প্রথম দিনেই হোচটের মতো খেতে হলো। কচিকাঁচারা ‘স্যার’ সম্বোধণের পরিবর্তে ‘টিচার’ ‘টিচার’ করছে। ‘টিচার’ মানে ‘শিক্ষক’। যার চাঁটগাইয়া অর্থ ‘মাস্টর’।

 

তিন-ভাইঃ

সন্ধ্যেবেলা চেম্বারে বসে আছি। হঠাৎ শুভাগমন হলো এক মক্কেলের। দেখলুম, মক্কেল সাহেব অধমের এক কালের ছাত্র। তো, যথারীতি ‘স্যার’ সম্বোধণে কুশলাদি বিনিময় করলো মক্কেল-ছাত্র। তবে একটু পরেই জিজ্ঞেস করলো-অমুক ভাই আছেন? ওই অমুক ভদ্রলোক আবার আমার ‘স্যার’। তো, ব্যাপারটা যা দাঁড়ালো তা এই- ওই অমুক ভদ্রলোক আমার ‘স্যার’ হলেও তিনি আমার ছাত্রের ভাই। জিজ্ঞাসুনেত্রে তাকালুম। ছাত্রের ব্যাখ্যা- তিনি আমার দলের লোক তো, তাই। অধম জিজ্ঞেস করলুম, ছাত্রের বাবাও ওই দল করেন কিনা। হ্যাঁ-বোধক উত্তর মিললো।এর পরের প্রশ্নটির লোভ সামলাতে না পেরে জিজ্ঞেসই করে বসলুম- তো, তুমি তোমার বাবাকেও কি ‘ভাই’ ডাকো? ছাত্র নিরুত্তর।

 

 

চার- হুজুরঃ

একদিন মামলার কার্যক্রম শেষে দায়রা আদালত থেকে গলদঘর্ম অবস্থায় ছুট লাগালুম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পানে। ওই আদালতের বারান্দায় পৌঁছতেই কান ঝালাপালা হবার জোগাড়। এক বিজ্ঞ মুখে ফেনা তুলছেন নিবেদন করতে গিয়ে। এক নিঃশ্বাসে বহুবার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছেন একটি শব্দের- ‘হুজুর’। অধম ভাবলুম, আদালতে নিশ্চয় বড়োসড়ো কোন ধর্মবেত্তা মৌলভী সাহেবের আগমন ঘটেছে। কিন্তু আদালত কক্ষে প্রবিষ্ট হয়ে দু’নয়নের অনেক কসরতের পরেও সেরকম কারও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেলো না অকূস্থলে।

 

মোহাম্মদ শাহজাহানঃ এডভোকেট, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, বান্দরবান ও কক্সবাজার। মুঠোফোনঃ০১৮২৭৬৫৬৮১৬

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...