প্রকাশিত: ১২/০৫/২০২২ ১১:২৮ এএম , আপডেট: ১২/০৫/২০২২ ১১:৫৫ এএম

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম :
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেশি-বিদেশি ২১০টি এনজিও কাজ করছে। তাদের মধ্যে কিছু কিছু এনজিও কর্তাবাবু আত্মীয়করণসহ নানা অনৈতিক ও বেআইনি তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। মানবতার সেবক হয়ে এসে তারা অমানবিকভাবে স্থানীয়দের চাকরিচ্যুত করছে। এতে দিন দিন বাড়ছে স্থানীয় বেকার যুবকের সংখ্যা। অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা থাকার পরও নানা অজুহাতে স্থানীয়দের চাকুরচ্যুত করে তারা অদক্ষ ও অযোগ্য লোকদের এনে সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।

এনজিওতে অধিক বেতন হওয়ায় কর্মকর্তারা তাদের আত্মীয়দের নিয়োগ দিয়ে স্থানীয়দের ছাটাই করে দিচ্ছে। ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রভাব ক্যাম্পেও লেগেছে। তাই পাঁচ জনের কাজ একজনকে দিয়ে করাতে হবে। এসব অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের এনে চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। কোন প্রকার যোগ্যতার বিচার-বিশ্লেষণ সেখানে নেই এমনটি অভিযোগ স্থানীয়দের।

কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদের সহ-সভাপতি শাহ আলম বলেন, উত্তরবঙ্গের লোকেরা তাদের ভাই, বোন, বোনের জামাই, স্বামী-স্ত্রী এমনকি অদক্ষ, অল্প শিক্ষিত সবাই এখানে এসে কাজ করছে। তারা বছরের পর বছর ক্যাম্পে কাজ করলেও তাদের চাকরি যায় না। আর আমাদের স্থানীয়দের বিভিন্ন অজুহাতে চাকরি হারাতে হচ্ছে। এটা অমানবিক।

উখিয়া হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস উখিয়া উপজেলা পরিষদের হল রুমে এনজিওদের সমাবেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে জানতে চেয়েছেন, এখানে উখিয়ার কয়জন ছেলে-মেয়ে কাজ করছেন। ঐ সময় এনজিও কর্মকর্তারা একজনও উখিয়ার ছেলে-মেয়ে তাদের সংস্থায় কাজ করছেন বলে দেখাতে পারেন নি। এমনি করে যেন তেনভাবে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ স্থানীয়দের জন্যে বরাদ্দ থাকলেও তা কোন খাতে কখন ব্যয় হচ্ছে তা কেউ জানে না। স্থানীয়দের জন্যে বরাদ্ধকৃত অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় হচ্ছে কিনা তা দেখভাল করার যেন কেউ নেই। সঠিক তদারকির অভাবে এনজিওগুলো নয়-ছয় করে পার পেয়ে যাচ্ছে।

পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক নুর মোহাম্মদ বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও কর্মকর্তারা তাদের এলাকার লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি দিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ জন্য নানা বেআইনী কার্যক্রমেও জড়িয়ে পড়ছে তারা। যে স্থানীয়রা এক সময় খাবার দিয়ে ও জায়গা দিয়ে রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচিয়েছে সেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন স্থানীয়রা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে ও আশপাশে স্থানীয়দের জায়গা বেহাত হওয়া থেকে শুরু করে ওখানে বসবাসকারী স্থানীয়দের জীবনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অথচ বেশির ভাগ এনজিও বিভিন্ন নামে ভিন্ন ভিন্ন রঙে প্রশিক্ষণের নামে, বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের নামে, ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে, অন্তঃসত্তা ও দুগ্ধদানকারী মা হিসেবে, বিধবা হিসেবে, আয়বর্ধনমূলক স্কিম হিসেবে বিভিন্ন নামে-বেনামে যেমন করে পারছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অর্থ খরচ করছে।

অন্যদিকে অনেক এনজিও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যেতে নিরুৎসাহিত করছে। অনেক এনজিও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে দুঃসাহস দেখাতে রোহিঙ্গাদের উৎসাহিত করে থাকে। রোহিঙ্গাদের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আরআরআরসি কার্যালয়ের নির্দেশনা রয়েছে জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে সব রোহিঙ্গাকে উৎসাহিত করার। কিন্তু ক্যাম্পগুলোর মধ্যে কোন উৎসাহ পরিলক্ষিত হয় না। প্রায় প্রতিটি এনজিও সংস্থায় রন্দ্রে রন্দ্রে অনিয়ম পরিলক্ষিত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ধর্মীয় প্রচার কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ...